সিলেটের বিশ্বনাথে বৃদ্ধা ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার ঘর দখলের অভিযোগ :প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
- আপডেট সময় : ০৭:৪৩:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪৯ বার পঠিত
আদালতে বাটোয়ারা মামলা -৪৭৩(২০২১)ইং থাকা সত্ত্বেও কোর্টের দেওয়া নির্দেশ অমান্য করে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হিমিদপুর গ্রামের প্রয়াত এডভোকেট মরহুম আইয়ুব আলী’র স্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধা মোছা: আছিয়া আইয়ূব মিনার বসত ঘর দখল ও ঘুম হত্যার হুমকি দিয়েছেন তারই দেবর যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতা মৃত তাহির আলী’র পুত্র কাওছার আলী (৬০) ও তার স্ত্রী জয়রুন উরফে জনতা বেগম (৫৫)।
১৯ শে ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধা মোছাঃ আছিয়া আইয়ুব মিনা। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে জানান,আমি একজন বৃদ্ধা এবং আমার বর্তমান বয়স প্রায় ৬৯ বছর। আমার তিন সন্তান বৈবাহিক সুত্রে বৃটিশ নাগরিক হওয়ায় তারা যুক্তরাজ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বাড়ীতে কাজের লোক ও ভাড়াটিয়া ছাড়া আমার আপন বলতে আর কেউ নেই। আমি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ায় প্রায় সময় সিলেট শহরে চিকিৎসার জন্য যেতে হয় এবং সিলেট শহরে আমার নিকটাত্মীয়ের বাসায় থাকতে হয়।
গত ১৪/১২/২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান-১০.০০ ঘটিকার সময় আমি সিলেট হইতে চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়িতে আসিয়া দেখতে পাই যে, কাউছার আলী (৬০), পিতা – মৃত হাজী তাহির আলী ও তার স্ত্রী জয়রুন উরফে জনতা বেগম (৫৫) ও তাদের আত্মীয় জাকির জোরপূর্বকভাবে আমার স্বামীর নির্মিত বসতঘরের পশ্চিম অংশ দখল করিয়া রাজমিস্ত্রী দ্বারা দেওয়াল নির্মান করিতেছেন। আমি কাউছার আলীকে ইহার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করিলে, তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কাউছার আলী তখন বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে বলে আমি (কাউছার আলী) আব্দুল মুমিন মামুন এর মাধ্যমে এবার প্রশাসনসহ বিশ্বনাথ উপজেলার বিএনপির নেতাদের ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকায় কন্টাক করেছি উক্ত সম্পত্তি দখল করার জন্য। সে (কাউছার আলী) তখন বলে আমি এবার তোকে(আমি – মোছাঃ আছিয়া আইয়ুব মিনাকে) বাড়ি হইতে বিতাড়িত করবো। এই হুমকি দেওয়ার কিছুপর সেখানে আমার পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা ও বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাওনপুর গ্রামের মরহুম আব্দুস সোবহানের পুত্র উক্ত আব্দুল মুমিন মামুন ঘটনাস্থলে আসেন এবং তাহার উপস্থিতিতে আমার স্বামী এবং সন্তানের অসংখ্য স্মৃতি বিজড়িত বসতঘরের পশ্চিম অংশ জোরপূর্বক দেওয়াল নির্মানের কাজ চালিয়ে যান। শারিরীকভাবে অসুস্থ আমি তখন বাকরুদ্ধ হয়ে যাই।এসময় আমি আমার রুমে গিয়ে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে মোবাইল ফোনে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত আমার বড় মেয়ে ফাহমিনা নুর লিপিকে বিষয়টি জানালে সে বাংলাদেশে অবস্থানরত জনাব গৌছ আলী সাহেবকে অবগত করার পর তিনি বিশ্বনাথ থানার ওসি জনাব রুবেল মিয়াকে ফোন করেন। কিন্ত ওসি সাহেব ফোন না ধরায়, বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জনাব গৌছ আলী সাহেব বিশ্বনাথের দুজন সাংবাদিককে আমার বাড়ীতে পাঠান। তারা এসে দেওয়াল নির্মানের ছবি তুলতে চাইলে, কাউছার আলী ও তার স্ত্রী সাংবাদিকদের কাছ থেকে তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জনাব গৌছ আলী আহবান করেন বিবাদমান বিষয় নিয়ে দুপক্ষের সাথে বসতে। তখন বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহেব আমার মেয়ের ভাশুর এর সাথে কথা বলে জরুরী ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল এগারটায় আমাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক উপরে উল্লেখিত আব্দুল মোমিন মামুন এর বাড়ীতে আপোষ মীমাংসার বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেন কিন্ত পরের দিন বিকেলে তারা বৈঠকে না বসার সিদ্ধান্ত জানান।
গত ১৬/১২/২০২৪ইং তারিখ রাতে প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা কাউছার আলী তাহার মোবাইল নম্বর থেকে (মোবাইল নং-০১৭২৮ ২৫২৯৭৪) হইতে আমার ভাড়াটিয়া এমদাদুল হক এর মোবাইল নম্বরে (মোবাইল নং-০১৭১১- ৯১২০৭৮) কল করে রুম খালি করার জন্য হুমকি প্রদান করে এবং লন্ডন প্রবাসী আমার বড় মেয়েকেও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে। এমতাবস্থায় গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ইং তারিখে আমি নিরুপায় হয়ে কাউছার আলী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে বিশ্বনাথ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। গতকাল ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ থানা থেকে একজন অফিসার ফোন করে জানিয়েছেন তিনি আজ বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল দেখার জন্য আমার বাড়ীতে আসবেন। এমতাবস্থায় তিনি এসে দেখে গিয়েছেন।
নিজের লিখিত বক্তব্যে মোছাঃ আছিয়া আইয়ুব মিনা আরোও বলেন, ২০২১ সালে কাউছার আলী সিলেট কোর্টে একটি বাটুয়ারা মামলা দায়ের করেন (যার নম্বর ৪৭৩/২০২১ইং)। এর পরবর্তিতে একই কোর্টে আমার (আছিয়া) পক্ষ থেকেও মামলা দায়ের করা হয়। আর উভয় পক্ষের মামলার প্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশনা দেন যে, পরবর্তি কোন আদেশ না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলার জন্য এবং উক্ত বিষয়ে সমাধানের পূর্ব পর্যন্ত নালিশা ভূমি সমূহে শান্তি-শৃঙ্খলা অবনতি হয় এরুপ কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার জন্য উভয় পক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা কাউছার আলী নিজের টাকার জোরে ‘প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের’ সাথে আতাত করে সড়ক কেটে ভূমি ও বাড়ির অংশ জোরপূর্বক দখল করে দেওয়াল নির্মাণ করেছে। তাই আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে ক্যান্সারে আক্রান্ত্র একজন মা হিসেবে নিজের ও পরিবারের সদস্য জীবনের নিরাপত্তা ও সম্পত্তি করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেস্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেস্টা, পুলিশের আইজিপি, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার’সহ সংশ্লিস্ট সকলের কাছে সার্বিক সহযোগীতা ও ন্যায় বিচার কামনা করছি। কারণ জীবনের অন্তিম বেলায় আমি (আছিয়া) একটু স্বস্তিতে বেঁচে থাকতে চাই, হয়রাণীর শিকার হয়ে মরতে চাই না।