দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে রাজধানীতে খেলাফত আন্দোলনের বিক্ষোভ
- আপডেট সময় : ১০:৩০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১৩ বার পঠিত
ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইল কতৃক চরম মানবাধিকার লংঘন, নির্বিচারে নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ মানুষ হত্যা; কাশ্মীর, আরাকান, জিনজিয়াং, আফ্রিকার দেশসমূহে মুসলিম নিধন; ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা মুসলমানদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন, নামাজ-রোজাসহ ধর্মীয় কার্যসম্পাদনে বাধা প্রদান; সব ধরনের জাতিগত নির্মূল প্রচেষ্টা, বর্ণবৈষম্য, বিনা বিচারে হত্যা, আটক, নির্যাতন, আলেম-উলামা ও ইসলামপন্থীদের উপর দমন-নিপীড়নসহ বিশ্বের নানান দেশে আগ্রাসী শক্তি কতৃক ভয়াবহ মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।
আজ (১০ ডিসেম্বর) রবিবার ৭৫তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিকাল সাড়ে তিনটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতী আফম আকরাম হোসাইন, মাওলানা আখতারুজ্জামান আশরাফী প্রমূখ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, সারাবিশ্বে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আজকে আমাদের এই সমাবেশ। সারাবিশ্বে মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা দাবিদাররাই আজ দেশে দেশে চরম মানবাধিকার লংঘন করছে। ইসরাইল ফিলিস্তিনে চরম মানবাধিকার লংঘন করে যাচ্ছে কিন্তু বিশ্বমোড়লরা নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। সারাবিশ্বের মুসলমানদেরকে সব ধরনের জুলুম-অত্যাচার-মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে। মুসলমানরা গর্জে উঠলে এবং মাঠে নামলে প্রকৃত অর্থে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে নিরপরাধ আলেম-উলামাদের মুক্তি ও তাদের উপর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামই একমাত্র কার্যকর ভুমিকা পালন করতে পেরেছে। ইসরাইলী বাহিনী ক্রমাগত মানবাধিকার লংঘন করে যাচ্ছে কিন্তু সারাবিশ্ব নীরব ভুমিকা পালন করছে। বদরের যুদ্ধে ৩১৩ জনের বাহিনীই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট ছিল। আজ বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমান একসাথে ইসরাইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে ইসরাইলী বাহিনী ও তার দোসররা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। আমরা দখলদার ইসরাইলের কোন পণ্য, তাদের সাহায্যকারী কোম্পানীগুলোর কোন পণ্যও ক্রয় করব না। ব্যবসায়ী ভাইরাও তাদের কোন পণ্য আমদানি ও বিক্রি করব না। এতেই তাদের অর্থনীতি ধ্বসে পড়তে বাধ্য হবে।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এই দিবসটি যারা প্রবর্তন করেছে তারাই আজ চরমভাবে মানবাধিকার লংঘন করছে। ইসরাইল প্রতি ঘন্টায় ১০-১২ জন শিশুকে হত্যা করছে। হাসপাতালে, আশ্রয়শিবিরে, উদ্বাস্তু ক্যাম্পে হামলা চালাচ্ছে যা শুধু মানবাধিকার লংঘনই নয় বরং যুদ্ধাপরাধের শামিল। বিনা বিচারে মানুষ হত্যা, মিথ্যা মামলায় মানুষকে জেলে আটকে রাখাও মানবাধিকারের লংঘন। মানবাধিকার লংঘনকারীরা তাদের অত্যাচার না থামালে মজলুম জনতা একসময় জেগে উঠবে এবং জালেমদের কবর রচনা করবে।
মুফতী সুলতান মহিউদ্দীন বলেন, সারাবিশ্বের কোথাও প্রকৃত মুসলমানদের দ্বারা মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে না। যেখানেই মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে সেখানেই রয়েছে ইহুদী-খ্রিস্টানদের নাপাক হাত। ফিলিস্তিনে ইসরাইল মানবাধিকার লংঘন করছে। ভারত কাশ্মীরে, মিয়ানমার আরাকানে মানবাধিকার লংঘন করছে। সারাবিশ্বের মুসলমানরা মিলে আমেরিকা-ইসরাইলসহ মানবাধিকার লংঘন কারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশে আলেম-উলামাদের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে, জেলে আটকে রেখে তাদের মানবাধিকার লংঘন করা হচ্ছে। অবিলম্বে আলেম-উলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পল্টন মোড়, বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকা প্রদক্ষিণ করে পল্টন মোড়ের কাছাকাছি এসে অত্যাচারিতের মুক্তি, অত্যাচারীদের পতন কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোফাচ্ছির হোসাইন, মাওলানা কামরুল ইসলাম, মুফতী আবুল হাসান কাসেমী প্রমূখ।