জিলহজ্ব মাসের আমল সমূহ
- আপডেট সময় : ০৯:৪১:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩ ২৫৩ বার পঠিত
মাওলানা শহিদুর রহমান:
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা গিয়াছে তাই আগামী ২৯ শে জুন রোজ বৃহস্পতিবার ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হবে।নতুন চাঁদ দেখে দোয়া পড়া সুন্নাহ!
اللهم اهله علينا بالامن والايمان والسلامه والاسلام ربي وربك الله هلال رشد وخير.
জিলহজ্বের চাঁদ উদিত হওয়ার সাথে সাথে কুরবানী দাতাগণ নিজ হাত-পায়ের নখ ও শরীরের চলু-পশম কাটা থেকে বিরত থাকা। হযরত উম্মে সালমা রা. থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, তোমাদের মধ্যে থেকে যে কুরবানী দেয়ার ইচ্ছা রাখে, সে যেনো জিলহজ্ব মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে কুরবানীর পশু জবেহ করার আগ পর্যন্ত নিজ চুল-নখ, পশম ইত্যাদি কর্তন করা থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম শরীফ-৫০৯১, ইবনে হিব্বান-৫৯১৬, তিরমিযী-১৫২৩) সুবহানাল্লাহ।
আরাফার দিনে রোযার হুকুম: ঈদের আগে দিন অর্থাৎ জিলহজ্ব মাসের নবম তারিখকে ইয়াওমুল আরাফা বলা হয়। সে দিনে রোযা রাখার অনেক ফযীলত রয়েছে। হযরত আবু ক্বাতাদাহ রা: রাসুলুল্লাহ সা: কে আরাফার দিনে রোযা রাখার ফযীলত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এর দ্বারা অতীতের ও ভবিষ্যতের এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (মুসলিম শরীফ, বাইহাকী)
তবে হাজীদের জন্য আরাফার দিন আরাফার ময়দানে আরাফার রোযা না রাখা উত্তম। কারণ রোযা রাখার কারণে আরাফয় অবস্থানকালে এই দিনের আমলগুলো করতে কষ্ট হতে পারে। তাই হাজীদের জন্য আরাফার দিন রোযা রাখা মাকরূহ বলা হয়েছে। (হাশিয়ায়ে জালালাইন)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়, প্রতিটি দিনের রোজা এক বছরের রোজার মতো আর প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের মতো’ (তিরমিজি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা: ১৫৮)।
জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত দিনে রোজা পালন করা, রাতে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত। যথা: নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, তওবা-ইস্তিগফার ইত্যাদি।
আরাফার দিনে পাঠ করার বিশেষ দোয়া: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, আরাফার দিনে পাঠ করার জন্য উত্তম দোয়া হলো, লাইলাহা ইল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু লাহুল মুল্ক ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। ( তিরমিযী, মুআত্তা)
তাকবীরে তাশরীকের সূচনা: ইবরাহীম আ: এর কুরবানীর ঐতিহাসিক পরীক্ষার মধ্যে দিয়েই উৎপত্তি ঘটে তাকবীরে তাশরীকের। ইবরাহীম আ: যখন আল্লাহর আদেশে ইসমাঈল আ: কে কুরবানী করতে প্রস্তুত ঠিক তখনই জিবরাঈল আ: আল্লাহর দ্বিতীয় আদেশ নিয়ে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, বলে উচ্চ:স্বরে চিৎকার করতে করতে জমিনে আসেন। শুনামাত্র হযরত ইসমাঈল আ: ছুরির নীচে থেকেই জবাব দিলেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার। এবং ইবরাহীম আ: আল্লাহর এ আদেশ পেয়ে প্রথম আদেশকে মনসুখ ভেবে পরম বিস্ময়ে ‘‘আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ’’ বলে আল্লাহর শোকর আদায় করে নিলেন। সব মিলিয়ে সৃষ্টি হলো তাকবীরে তাশরীক ‘‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ’’।
তাকবীরে তাশরীক কখন পড়বো: জিলহজ্ব মাসের নবম তারিখ ফজরের নামাযের পর থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামায পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত নামাযের পর নারী-পুরুষ সকলের জন্য একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। পুরুষ ও মহিলা , একাকী বা জামাতের নামাজে তাকবীর বলার ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই। পুরুষ উচ্চ: স্বরে এবং মহিলা অনুচ্চ:স্বরে তাকবীর বলবে। তাকবীরে তাশরীক একবারের অধিক বলার কথা উল্লেখ নেই। এ জন্য একবারের বেশী পড়া সুন্নত পরিপন্থী।