সিলেটের বিশ্বনাথে মাদানিয়া মাদরাসার সামনে রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংবাদ সম্মেলন
- আপডেট সময় : ১১:৩৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩ ৪৯১ বার পঠিত
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরশহরের নতুন বাজারে দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসার সামনে পৌরসভার উদ্যোগে নতুন রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। উভয় পক্ষেই মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্যর জানান দিচ্ছেন। এরই আলোকে মাদানিয়া মাদরাসার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত ২১ মে মাদরাসার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছেন। জানিয়েছেন অনেক তথ্য। সংবাদ সম্মেলনে মুহতামিম মাওলানা শিব্বির আহমদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা সেবাতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং সরকারী-বেসরকারী কল্যাণমূলক কর্মূসচি, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র, টীকা কেন্দ্র হিসেবে জনসাধারনের বিশ্বাস ও এলাকার আস্থার প্রতীক হয়ে আছে। কোমলমতি শিশু সহ এই মাদরাসার প্রায় হাজারের অধিক ছাত্র রয়েছে। মাদরাসাকে কেন্দ্র করে ১৯৫৯ সালে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বিশ্বনাথ নতুন বাজার সৃষ্টি হয়। সেই সময় থেকে অদ্যাবধি মাদরাসার সংলগ্ন সড়ক ও জনপথের এ অংশটি মাদরাসার রক্ষণাবেক্ষণে আছে। মাদরাসার পশ্চিম পার্শ্বে উত্তর-দক্ষিণ প্রায় ২০০ ফুট লম্বা ও ৫০ ফুট প্রস্থ ২০ ফুট গভীর সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের রাস্তার খাল ছিল। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমোদনক্রমে উক্ত খালে মাদরাসা ছাত্রদের গোসল ও মসজিদের মুসল্লিদের ওজুর জন্য পাকা ঘাট তৈরি করেছিল। বহুদিন খালটি মাদরাসার পুকুর হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় খালটিতে বাজারের ময়লা ফেলার কারণে খালের পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষ এই জায়গাটি মাদরাসার নামে বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। মন্ত্রণালয়ে স্থায়ী বন্দোবস্তের বিধান না থাকায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার পর ভূমি মন্ত্রণালয় সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের নো অবজেকশন এর সার্টিফিকেট প্রদান করে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে প্রশাসনের মৌখিক অনুমোদনের মাধ্যমে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে জায়গাটি ভরাট করে। অতপর ২০১০ সালে তৎকালীন টিএনও সোনা মনি চাকমার আহবানে উপজেলা প্রকৌশলীর ড্রইং মোতাবেক উক্ত জায়গার উপর দিয়ে উপজেলা পানি নিষ্কাশনের জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ৭-৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আর সিসি ও ব্রীক ড্রেনে নির্মাণ করি। ২০১৮ সালের শেষের দিকে কয়েকজন ক্ষুদে চটপটি বিক্রেতা ভ্যানগাড়ির মাধ্যমে ব্যবসা করতে চাইলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে। পরবর্তীতে নতুন বাজার বণিক সমিতির সভাপতিসহ কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীলগণ গরীব এ সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে মাদরাসার এতিমখানায় ভাড়া দেয়ার শর্তে ব্যবসার সুযোগ দানের অনুরোধ জানালে মাদরাসার কমিটি বৈঠকের মাধ্যমে বাজার কমিটির অনুরোধ গ্রহণ করেন। এরপর থেকে কয়েকজন অস্থায়ী চটপটি ও পান দোকানদারগন প্রথম দিকে ২০ টাকা থেকে শুরু করে শেষের দিকে ১০০ টাকা করে অনিয়মিতভাবে মাদরাসার এতিমখানার ফান্ডে রশিদের মাধ্যমে প্রদান করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি কুচক্রিমহল মাদানিয়া মাদ্রাসার সামনের ভূমি দখল করার পায়তারা করে আসছে। কিন্তু মাদ্রাসার কারণে তারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের স্বপ্নের বিশ্বনাথ পৌরসভা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জনপ্রতিনিধি পেয়েছি। এই পৌরসভায় নানা সমস্যা রয়েছে। সেগুলোর সামাধান না করে হঠাৎ দেখা যায় গভীর রাতে মাদ্রাসার সামনে একটি রাস্তার কাজ শুরু করা হয়েছে। পরে মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রদের তোপের মুখে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় কাউন্সিলর ফজর আলী মাদ্রাসায় এসে অনেক বিনয় করে ওখানে রাস্তা করার অনুমতি চান। কোমলমতি শিশুদের চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টি হবে ভেবেও পরের দিন মুরব্বিরা বসে তাকে একটি সুযোগ দেন, পরিকল্পনার মাধ্যমে সড়ক ও জনপদের সড়কের পাশ দিয়ে ওই রাস্তা করার। কিন্তু মুরব্বিদের কথামত পরিকল্পনা ছাড়া রাস্তার কাজ শুরু করায় আবারও আমরা রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিই।এ বিষয়ে প্রশাসনসহ এলাকার সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা কামরুল ইসলাম ছমির, মাদানিয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আরকুম আলী, তাজ উদ্দিন, আলহাজ্ব শফিকুর রহমান, দাতা সদস্য মুহিবুর রহমান, মাদ্রাসা মার্কেটের ব্যবসায়ী কাওছার আহমদ প্রমুখ।