এক মুর্খ আবিদের ঘটনা
- আপডেট সময় : ০৯:৫৪:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩ ১১১ বার পঠিত
হযরত থানভী রহ: বলেন আমাদের মহল্লায় এক মুর্খ ছিল, খুব ইবাদত বন্দেগী করত। মানুষও তাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করত। তাকে বুযর্গ মনে করত। ঐ মহল্লায়ই নিযামউদ্দিন নামে এক কৌতুকপ্রিয় ব্যক্তি ছিল। সে ঐ আবিদ সাহেবের বুযর্গী স্বীকার করত না। বলত জাহেলের আবার বুযর্গী? একদিন ঐ আবিদ যখন তাহাজ্জুদ পড়তে উঠল নিযাম তার ছাদে উঠে আস্তে আস্তে তাকে ডাকল। সে বলল, কে? উত্তর দিল, আমি জিবরাঈল আল্লাহর পক্ষ থেকে পয়গাম নিয়ে এসেছি যে, তুমি অনকে বৃদ্ধ হয়ে গেছ, এখন শীতও খুব তীব্র, রাতে উঠে অজু করতে তোমার খুব কষ্ট হয়, আমি খোদার এতে লজ্জা হয় যে, তোমার মত এক বৃদ্ধ বান্দাকে এরূপ কষ্ট দেই। সুতরাং এখন থেকে তোমার নামায মাফ করে দিলাম।
এ কথা শুনে তো সে মহাখুশী। বিছানায় শুয়ে পা ছড়িয়ে নাক ডেকে খুব ঘুমিয়েছে, ফজরের নামাযেও শরীক হয়নি। লোকেরা মনে করেছে হয়ত শরীর খারাপ বা ঘুম ভাঙ্গেনি, কিন্তু কয়েক ওয়াক্ত নামাযে যখন অনুপস্থিত তখন মহল্লাবাসীরা অবস্থা জানার জন্য তার বাড়ীতে গিয়ে দেখে সে সম্পূর্ণ সুস্থ। খাটে শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছে। লোকেরা জিজ্ঞাসা করে, মিয়া সাহেব শরীর কেমন আছে? তিনি বলেন, খুব ভাল আছি। আবার প্রশ্ন, নামাযে আসেন না যে, তখন আবেদ সাহেব অত্যন্ত গর্বের সাথে জবাব দেন, ভাই জীবনে বহুত নামায পড়েছি, ইবাদত করেছি, খোদা আমার ইবাদতে সন্তুষ্ট হয়ে গেছেন। সুতরাং নামাযের আসল উদ্দেশ্য হাসেল হয়ে গেছে এখন আমার নিকট ফেরেস্তাদের আগমন শুরু হয়ে গেছে। পরশু রাতে এই পয়গাম দিয়ে গেল যে, আমার নামায মাফ করে দেয়া হয়েছে।
কৌতুকী নিযাম একটু দুর বসা ছিল। অট্টহাসি দিয়ে বলে উঠল, দেখলেন তো জাহেলের বুযর্গী। লোকেরা বলল, আরে জালেম তুইতো একেবারে গজব করে দিয়েছিস।
এতো এক জাহেলের ঘটনা ছিল। যা শুনে তাকে অত্যন্ত তুচ্ছ ও বেওকুফ মনে করা হয়। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দেই তাহলে দেখা যাবে যে আমাদের অবস্থা আরও করুণ যে চার দিন ইবাদত করেই অপেক্ষায় থাকি আল্লাহ পাকের দীদার বা সাক্ষাতের।