ঢাকা ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সিলেটের বিশ্বনাথে ব্যারিস্টার নাজির ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে শিশুদের ফ্রি খৎনা প্রদান Logo সিলেটের বিশ্বনাথে ফাতেমা খাতুন আদর্শ মহিলা মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন Logo সিলেটের বিশ্বনাথে বৃদ্ধা ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার ঘর দখলের অভিযোগ :প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo জামিয়া মাদানিয়া বিশ্বনাথ মাদরাসার ৬৬ তম বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলন ২৮ ডিসেম্বর Logo সিলেটের বিশ্বনাথে আল মাদরাসাতুল হানাফিয়ায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে সংবর্ধনা Logo সিলেটের বিশ্বনাথে হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের ২৯তম হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন Logo সিলেটের বিশ্বনাথে আল মাদরাসাতুল হানাফিয়ায় দুই শিক্ষানুরাগীকে সংবর্ধনা Logo বিশ্বনাথে নব নিযুক্ত শিক্ষা অফিসার নাস্তিক মাহমুদুল হক অপসারণ ও অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্টিত Logo ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইসলামী মহাসম্মেলন থেকে ৯ দফা ঘোষণা Logo তাবলিগের রাহবার আলেমরা, অন্য কেউ নয়

সুরায়ে কাহ্ফ এর শানে নুযুল ও ফজিলত

ইসলামিক মিডিয়া ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৬:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩ ২২১ বার পঠিত

সুরা কাহ্ফ মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত-১১০
সুরা কাহ্ফের বৈশিষ্ট্য ও ফযীলত
মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও মুসনাদে আহমদে হযরত আবুদারদা রা: থেকে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি সুরা কাহ্ফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করে, সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে নিরাপদ থাকবে। উল্লেখিত গ্রন্থসমূহে হযরত আবু দারদা থেকে অপর একটি রেওয়ায়েতে এই বিষয়বস্তু সুরা কাহ্ফের শেষ দশ আয়াত মুখস্থ করা সম্পর্কে বর্ণিত আছে।
মুসনাদে আহমদে হযরত সাহল ইবনে ’আযের রেওয়ায়েতে আছে যে, রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহ্ফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে, তার জন্যে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুরা পাঠ করে, তার জন্যে যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়।
কোন কোন রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সুরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করে, তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দেবে এবং বিগত জুমআ থেকে এই জুমআ পর্যন্ত তার সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
হাফেজ জিয়া মুকাদ্দাসী ‘মুখতারাহ’ গ্রন্থে হযরত আলী রা: এর রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহ্ফ পাঠ করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয়, তবে সে তার ফেৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে। ( ইবনে কাসীর থেকে গৃহীত)।
রুহুল মা’আনীতে হযরত আনাস রা: এর বর্ণিত রেওয়ায়েতে রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, সুরা কাহ্ফ সম্পুর্ণটুকু এক সময়ে নাযিল হয়েছে এবং সত্তর হাজার ফেরেশতা এর সঙ্গে আগমন করেছেন। এতে এর মাহাত্ম্য প্রকাশ পায়।
শানে নুযুল: ইমাম ইবনে জরীর তাবারী হযরত ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেন: যখন মক্কায় রাসুলুল্লাহ সা: এর নবুওয়াতের চর্চা শুরু হয় এবং কুরাইশরা তাতে বিব্রত বোধ করতে থাকে, তখন তারা নযর ইবনে হারেস ও ওকবা ইবনে আবী মুয়ী’তকে মদীনার ইহুদী পণ্ডিতদের কাছে প্রেরণ করে। রাসুলুল্লাহ সা: সম্পর্কে তারা কি বলে, জানার জন্য। ইহুদী পণ্ডিতরা তাদেরকে বলে দেয় যে, তোমরা তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করো। তিনি এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলে বুঝে নেবে যে, তিনি আল্লাহর রাসুল। অন্যথায় বোঝবে, তিনি একজন বাগাড়ম্বরকারী রাসুল নন। (এক) তাঁকে ঐসব যুবকের অবস্থা জিজ্ঞে কর, যারা প্রাচীনকালে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাদের ঘটনা কি? কেননা, এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা। (দুই) তাঁকে সে ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস কর, যে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম এবং সারা বিশ্ব সফর করেছিল। তার ঘটনা কি? (তিন) তাঁকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন কর যে, এটা কি?
উভয় কুরাইশী মক্কায় ফিরে এসে ভ্রাতৃসমাজকে বলল। আমরা একটি চুড়ান্ত ফয়সালার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফিরে এসেছি। অত:পর তারা তাদেরকে ইহুদী আলেমদের কাহিনী শুনিয়ে দিল। কুরাইশরা রাসুলুল্লাহ সা: এর কাছে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে হাযির হল। তিনি শুনে বললেন: আগামীকাল উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলে গেলেনে। কুরাইশরা ফিরে গেল। রাসুলুল্লাহ সা: ওহীর আলোকে জওয়াব দেবার জন্যে আল্লাহর তরফ থেকে ওহী আসার অপেক্ষায় রইলেন। কিন্তু ওয়াদা অনুযায়ী পর দিবস পর্যন্ত ওহী আগমন করল না; বরং পনের দিন এ অবস্থায় কেটে গেল। ইতিমধ্যে জিবরাঈলও এলেন না এবং কোন ওহীও নাযিল হল না। অবস্থাদৃষ্টে কুরাইশরা ঠাট্টা বিদ্রূপ আরম্ভ করে দিল। এতে রাসুলুল্লাহ সা: খুবই দু:খিত ও চিন্তিত হলেন।
পনের দিন পর জিবরাঈল সুরা কাহ্ফ নিয়ে অবতরণ করলেন। এতে ওহীর বিলম্বের কারণও বর্ণনা করে দেয়া হল যে, ভবিষ্যতে কোন কাজ করার ওয়াদা করা হলে ইনশাআল্লাহ বলা উচিত। এ ঘটনায় এরূপ না হওয়ার কারণে হুশিয়ার করার জন্য বিলম্বে ওহী নাযিল করা হয়েছে।

ট্যাগস :

ফেসবুকে আমরা

সুরায়ে কাহ্ফ এর শানে নুযুল ও ফজিলত

আপডেট সময় : ০৮:৫৬:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩

সুরা কাহ্ফ মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত-১১০
সুরা কাহ্ফের বৈশিষ্ট্য ও ফযীলত
মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও মুসনাদে আহমদে হযরত আবুদারদা রা: থেকে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি সুরা কাহ্ফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করে, সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে নিরাপদ থাকবে। উল্লেখিত গ্রন্থসমূহে হযরত আবু দারদা থেকে অপর একটি রেওয়ায়েতে এই বিষয়বস্তু সুরা কাহ্ফের শেষ দশ আয়াত মুখস্থ করা সম্পর্কে বর্ণিত আছে।
মুসনাদে আহমদে হযরত সাহল ইবনে ’আযের রেওয়ায়েতে আছে যে, রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহ্ফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে, তার জন্যে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুরা পাঠ করে, তার জন্যে যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়।
কোন কোন রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সুরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করে, তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দেবে এবং বিগত জুমআ থেকে এই জুমআ পর্যন্ত তার সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
হাফেজ জিয়া মুকাদ্দাসী ‘মুখতারাহ’ গ্রন্থে হযরত আলী রা: এর রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহ্ফ পাঠ করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয়, তবে সে তার ফেৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে। ( ইবনে কাসীর থেকে গৃহীত)।
রুহুল মা’আনীতে হযরত আনাস রা: এর বর্ণিত রেওয়ায়েতে রাসুলুল্লাহ সা: বলেন, সুরা কাহ্ফ সম্পুর্ণটুকু এক সময়ে নাযিল হয়েছে এবং সত্তর হাজার ফেরেশতা এর সঙ্গে আগমন করেছেন। এতে এর মাহাত্ম্য প্রকাশ পায়।
শানে নুযুল: ইমাম ইবনে জরীর তাবারী হযরত ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেন: যখন মক্কায় রাসুলুল্লাহ সা: এর নবুওয়াতের চর্চা শুরু হয় এবং কুরাইশরা তাতে বিব্রত বোধ করতে থাকে, তখন তারা নযর ইবনে হারেস ও ওকবা ইবনে আবী মুয়ী’তকে মদীনার ইহুদী পণ্ডিতদের কাছে প্রেরণ করে। রাসুলুল্লাহ সা: সম্পর্কে তারা কি বলে, জানার জন্য। ইহুদী পণ্ডিতরা তাদেরকে বলে দেয় যে, তোমরা তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করো। তিনি এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলে বুঝে নেবে যে, তিনি আল্লাহর রাসুল। অন্যথায় বোঝবে, তিনি একজন বাগাড়ম্বরকারী রাসুল নন। (এক) তাঁকে ঐসব যুবকের অবস্থা জিজ্ঞে কর, যারা প্রাচীনকালে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাদের ঘটনা কি? কেননা, এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা। (দুই) তাঁকে সে ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস কর, যে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম এবং সারা বিশ্ব সফর করেছিল। তার ঘটনা কি? (তিন) তাঁকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন কর যে, এটা কি?
উভয় কুরাইশী মক্কায় ফিরে এসে ভ্রাতৃসমাজকে বলল। আমরা একটি চুড়ান্ত ফয়সালার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফিরে এসেছি। অত:পর তারা তাদেরকে ইহুদী আলেমদের কাহিনী শুনিয়ে দিল। কুরাইশরা রাসুলুল্লাহ সা: এর কাছে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে হাযির হল। তিনি শুনে বললেন: আগামীকাল উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলে গেলেনে। কুরাইশরা ফিরে গেল। রাসুলুল্লাহ সা: ওহীর আলোকে জওয়াব দেবার জন্যে আল্লাহর তরফ থেকে ওহী আসার অপেক্ষায় রইলেন। কিন্তু ওয়াদা অনুযায়ী পর দিবস পর্যন্ত ওহী আগমন করল না; বরং পনের দিন এ অবস্থায় কেটে গেল। ইতিমধ্যে জিবরাঈলও এলেন না এবং কোন ওহীও নাযিল হল না। অবস্থাদৃষ্টে কুরাইশরা ঠাট্টা বিদ্রূপ আরম্ভ করে দিল। এতে রাসুলুল্লাহ সা: খুবই দু:খিত ও চিন্তিত হলেন।
পনের দিন পর জিবরাঈল সুরা কাহ্ফ নিয়ে অবতরণ করলেন। এতে ওহীর বিলম্বের কারণও বর্ণনা করে দেয়া হল যে, ভবিষ্যতে কোন কাজ করার ওয়াদা করা হলে ইনশাআল্লাহ বলা উচিত। এ ঘটনায় এরূপ না হওয়ার কারণে হুশিয়ার করার জন্য বিলম্বে ওহী নাযিল করা হয়েছে।