ঢাকা ০৫:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সিলেটের বিশ্বনাথে ব্যারিস্টার নাজির ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে শিশুদের ফ্রি খৎনা প্রদান Logo সিলেটের বিশ্বনাথে ফাতেমা খাতুন আদর্শ মহিলা মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন Logo সিলেটের বিশ্বনাথে বৃদ্ধা ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার ঘর দখলের অভিযোগ :প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo জামিয়া মাদানিয়া বিশ্বনাথ মাদরাসার ৬৬ তম বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলন ২৮ ডিসেম্বর Logo সিলেটের বিশ্বনাথে আল মাদরাসাতুল হানাফিয়ায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে সংবর্ধনা Logo সিলেটের বিশ্বনাথে হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের ২৯তম হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন Logo সিলেটের বিশ্বনাথে আল মাদরাসাতুল হানাফিয়ায় দুই শিক্ষানুরাগীকে সংবর্ধনা Logo বিশ্বনাথে নব নিযুক্ত শিক্ষা অফিসার নাস্তিক মাহমুদুল হক অপসারণ ও অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্টিত Logo ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইসলামী মহাসম্মেলন থেকে ৯ দফা ঘোষণা Logo তাবলিগের রাহবার আলেমরা, অন্য কেউ নয়

সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা মানে সৃষ্টিহীনতা

ইসলামিক মিডিয়া ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ১০:২৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫৬ বার পঠিত

মুসা আল হাফিজ

সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারে না আর সৃষ্টিকর্তার কোন শুরুও থাকা সম্ভব না। যদি এটি থাকতো, তাহলে বিশ্বজগতের শুরুই হতো না একটি  যৌক্তিক অসম্ভাবনার কারণে।

গোড়ার ভুল হলো, সৃষ্টিকর্তাকে না বুঝা। কারণ সৃষ্টিকর্তা তিনিই, যিনি আপন অস্তিত্বের জন্য কারো মুখাপেক্ষি নন, কেউ তাকে সৃষ্টি করতে হয় না, করে না। স্রষ্টা হচ্ছেন তিনি, যিনি সৃষ্টি করেন।

সৃষ্টি কেবল সেটাই, যার জন্য স্রষ্টার প্রয়োজন, যাকে গড়া হয়। স্রষ্টা তিনিই হবেন, যিনি প্রয়োজনের উর্ধ্বে, তাকে বানাতে যদি অন্য কারো প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে, সৃষ্টি নিয়ে আলাপ হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে নয়।

সৃষ্টিকর্তা মানেই সর্বাপেক্ষা শক্তিমান সত্তা, যিনি আপন প্রয়োজন ছাড়াই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, যিনি সর্বাপেক্ষা বুদ্ধি ও প্রজ্ঞাবান সত্তা, যিনি বুদ্ধি ও প্রজ্ঞাকে তৈরী করেছেন, যা থেকে জন্ম নিয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সূত্রাবলী, যিনি স্থান-কালের অতীত, যার নেই শুরু, নেই শেষ!

স্রষ্টার সত্তার যখন শুরু নেই, তাকে সৃষ্টিরও প্রশ্ন আসে না। যদি তার স্রষ্টা থাকতেন, সৃষ্টি অসম্ভব হতো। কারণ সৃষ্টির জন্য তিনি মুখাপেক্ষি থাকতেন সেই স্রষ্টার, সেই স্রষ্টা বাধ্য থাকতেন আরেক স্রষ্টার, আরেক স্রষ্টা নির্ভরশীল থাকতেন আরেক স্রষ্টার উপর।

এভাবে চলতে থাকতো চিরকাল, অসীম বাধ্যতা, মুখাপেক্ষিতা। চূড়ান্ত ইচ্ছের প্রয়োগে কেউই পারতো না বানাতে, সাজাতে!

কিন্তু জগত যেহেতু বানানো এবং সাজানো, এর মানে হলো, এমন সত্তা একে বানিয়েছেন, যিনি সৃষ্ট নন, অন্যের মুখাপেক্ষি নন, স্বয়ংসম্পূর্ণ! তিনি যেহেতু স্রষ্টা, তাই তাঁর সম্পর্কে ‘সৃষ্ট’ শব্দটাই প্রযোজ্য নয়।

ধরুন বিগব্যাঙ অবস্থার আগের অবস্থা। কী ছিলো তখন? বৈজ্ঞানিক শোনাবেন নানারকম প্রস্তাবনা, অনুমান। সাধারণ আপেক্ষিকতার  প্রস্তাবনা হলো, তখন সকল বস্তু, শক্তি আর স্থান এক শুণ্য আয়তনের কিন্তু অসীম ঘনত্ববিশিষ্ট এক বিন্দুতে সীমাবদ্ধ ছিল। বিজ্ঞানীরা এই অবস্থাকে বলেন সিঙ্গুলারিটি।

এই যে সিঙ্গুলারলিটি, এর পেছনের দিকে যাওয়া যাক। যেতে যেতে দেখবো, মহাবিশ্বের আয়তন কমছে আর কমছে। সময়ের প্রথম অবস্থায় গিয়ে মহাবিশ্বের আয়তন আবার ওই বিন্দুতে গিয়ে মিলে যাবে। যে বিন্দুর চেয়ে ক্ষুদ্র বিন্দুর অস্তিত্ব অসম্ভব। যার থাকা প্রায় না থাকা, যদিও তাকে  নেই বলা যায় না।

অস্তিত্ব আছে তার, কিন্তু এর চেয়ে ছোট অস্তিত্ব অসম্ভব। সেই যে বিন্দু, সে হলো শুরুর আগের শুরুর ভিত্তি। তার আগে আর কিছুই ছিলো না।

এর মানে, সৃষ্টিতে এমন কিছুর অস্তিত্ব মেনে নিতে হচ্ছে, যার আগে আর সৃষ্টি বলতে কিছুই ছিলো না, থাকা সম্ভব নয়।

তাহলে মহাবিশ্বের স্রষ্টার আগে কিছু নেই, ছিলো না, থাকা অসম্ভব, এটা মানতে সমস্যা কোথায়?

লেখক: কবি, গবেষক, চেয়ারম্যান, ইসলামিক হিস্ট্রি এন্ড কালচার অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ।

ট্যাগস :

ফেসবুকে আমরা

সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা মানে সৃষ্টিহীনতা

আপডেট সময় : ১০:২৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২

মুসা আল হাফিজ

সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারে না আর সৃষ্টিকর্তার কোন শুরুও থাকা সম্ভব না। যদি এটি থাকতো, তাহলে বিশ্বজগতের শুরুই হতো না একটি  যৌক্তিক অসম্ভাবনার কারণে।

গোড়ার ভুল হলো, সৃষ্টিকর্তাকে না বুঝা। কারণ সৃষ্টিকর্তা তিনিই, যিনি আপন অস্তিত্বের জন্য কারো মুখাপেক্ষি নন, কেউ তাকে সৃষ্টি করতে হয় না, করে না। স্রষ্টা হচ্ছেন তিনি, যিনি সৃষ্টি করেন।

সৃষ্টি কেবল সেটাই, যার জন্য স্রষ্টার প্রয়োজন, যাকে গড়া হয়। স্রষ্টা তিনিই হবেন, যিনি প্রয়োজনের উর্ধ্বে, তাকে বানাতে যদি অন্য কারো প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে, সৃষ্টি নিয়ে আলাপ হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে নয়।

সৃষ্টিকর্তা মানেই সর্বাপেক্ষা শক্তিমান সত্তা, যিনি আপন প্রয়োজন ছাড়াই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, যিনি সর্বাপেক্ষা বুদ্ধি ও প্রজ্ঞাবান সত্তা, যিনি বুদ্ধি ও প্রজ্ঞাকে তৈরী করেছেন, যা থেকে জন্ম নিয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সূত্রাবলী, যিনি স্থান-কালের অতীত, যার নেই শুরু, নেই শেষ!

স্রষ্টার সত্তার যখন শুরু নেই, তাকে সৃষ্টিরও প্রশ্ন আসে না। যদি তার স্রষ্টা থাকতেন, সৃষ্টি অসম্ভব হতো। কারণ সৃষ্টির জন্য তিনি মুখাপেক্ষি থাকতেন সেই স্রষ্টার, সেই স্রষ্টা বাধ্য থাকতেন আরেক স্রষ্টার, আরেক স্রষ্টা নির্ভরশীল থাকতেন আরেক স্রষ্টার উপর।

এভাবে চলতে থাকতো চিরকাল, অসীম বাধ্যতা, মুখাপেক্ষিতা। চূড়ান্ত ইচ্ছের প্রয়োগে কেউই পারতো না বানাতে, সাজাতে!

কিন্তু জগত যেহেতু বানানো এবং সাজানো, এর মানে হলো, এমন সত্তা একে বানিয়েছেন, যিনি সৃষ্ট নন, অন্যের মুখাপেক্ষি নন, স্বয়ংসম্পূর্ণ! তিনি যেহেতু স্রষ্টা, তাই তাঁর সম্পর্কে ‘সৃষ্ট’ শব্দটাই প্রযোজ্য নয়।

ধরুন বিগব্যাঙ অবস্থার আগের অবস্থা। কী ছিলো তখন? বৈজ্ঞানিক শোনাবেন নানারকম প্রস্তাবনা, অনুমান। সাধারণ আপেক্ষিকতার  প্রস্তাবনা হলো, তখন সকল বস্তু, শক্তি আর স্থান এক শুণ্য আয়তনের কিন্তু অসীম ঘনত্ববিশিষ্ট এক বিন্দুতে সীমাবদ্ধ ছিল। বিজ্ঞানীরা এই অবস্থাকে বলেন সিঙ্গুলারিটি।

এই যে সিঙ্গুলারলিটি, এর পেছনের দিকে যাওয়া যাক। যেতে যেতে দেখবো, মহাবিশ্বের আয়তন কমছে আর কমছে। সময়ের প্রথম অবস্থায় গিয়ে মহাবিশ্বের আয়তন আবার ওই বিন্দুতে গিয়ে মিলে যাবে। যে বিন্দুর চেয়ে ক্ষুদ্র বিন্দুর অস্তিত্ব অসম্ভব। যার থাকা প্রায় না থাকা, যদিও তাকে  নেই বলা যায় না।

অস্তিত্ব আছে তার, কিন্তু এর চেয়ে ছোট অস্তিত্ব অসম্ভব। সেই যে বিন্দু, সে হলো শুরুর আগের শুরুর ভিত্তি। তার আগে আর কিছুই ছিলো না।

এর মানে, সৃষ্টিতে এমন কিছুর অস্তিত্ব মেনে নিতে হচ্ছে, যার আগে আর সৃষ্টি বলতে কিছুই ছিলো না, থাকা সম্ভব নয়।

তাহলে মহাবিশ্বের স্রষ্টার আগে কিছু নেই, ছিলো না, থাকা অসম্ভব, এটা মানতে সমস্যা কোথায়?

লেখক: কবি, গবেষক, চেয়ারম্যান, ইসলামিক হিস্ট্রি এন্ড কালচার অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ।